অবশেষে বহুল কাঙ্ক্ষিত কক্সবাজার-ঢাকা রুটে ট্রেনের ভাড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী কক্সবাজার থেকে ঢাকা পর্যন্ত ৫৩৫ কিলোমিটার ভাড়া আদায়যোগ্য দূরত্বে লোকাল ট্রেনের সর্বনিম্ন ভাড়া ১২৫ টাকা এবং আন্তঃনগর ট্রেনে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী।
ভাড়ার তালিকা অনুযায়ী দেখা গেছে, কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে রামু রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া আদায়যোগ্য পথের দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। এই পথে দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির ট্রেনের ভাড়া পাঁচ টাকা; মেইল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ১৫ টাকা; কমিউটার ট্রেনের ভাড়া ২০ টাকা; সুলভ শ্রেণির ভাড়া ৩৫ টাকা; শোভন শ্রেণির ভাড়া ৪৫ টাকা; আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫০ টাকা; প্রথম শ্রেণির চেয়ারের ভাড়া ১০৪ টাকা; প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১২৭ টাকা; স্নিগ্ধা শ্রেণির (এসি চেয়ার) ভাড়া ১১৫ টাকা; এসি সিটের ভাড়া ১২৭ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১৫০ টাকা।
ইসলামাবাদ রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া আদায়যোগ্য পথের দূরত্ব ৩৬ কিলোমিটার। এই পথে দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির ট্রেনের ভাড়া ১১ টাকা; মেইল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ১৫ টাকা; কমিউটার ট্রেনের ভাড়া ২০ টাকা; সুলভ শ্রেণির ভাড়া ৩৫ টাকা; শোভন শ্রেণির ভাড়া ৪৫ টাকা; আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫০ টাকা; প্রথম শ্রেণির চেয়ারের ভাড়া ১০৪ টাকা; প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১২৭ টাকা; স্নিগ্ধা শ্রেণির (এসি চেয়ার) ভাড়া ১১৫ টাকা; এসি সিটের ভাড়া ১২৭ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১৫০ টাকা।
ডুলাহাজরা রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া আদায়যোগ্য পথের দূরত্ব ৪৯ কিলোমিটার। এই পথে দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির ট্রেনের ভাড়া ১৫ টাকা; মেইল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ২০ টাকা; কমিউটার ট্রেনের ভাড়া ২৫ টাকা; সুলভ শ্রেণির ভাড়া ৩৫ টাকা; শোভন শ্রেণির ভাড়া ৫০ টাকা; আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ৬০ টাকা; প্রথম শ্রেণির চেয়ারের ভাড়া ১০৪ টাকা; প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১৩৩ টাকা; স্নিগ্ধা শ্রেণির (এসি চেয়ার) ভাড়া ১১৫ টাকা; এসি সিটের ভাড়া ১৩৩ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ২০২ টাকা।
চকরিয়া রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া আদায়যোগ্য পথের দূরত্ব ৬৬ কিলোমিটার। এই পথে দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির ট্রেনের ভাড়া ২০ টাকা; মেইল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ৩০ টাকা; কমিউটার ট্রেনের ভাড়া ৩৫ টাকা; সুলভ শ্রেণির ভাড়া ৪০ টাকা; শোভন শ্রেণির ভাড়া ৬৫ টাকা; আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ৮০ টাকা; প্রথম শ্রেণির চেয়ারের ভাড়া ১২১ টাকা; প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১৭৯ টাকা; স্নিগ্ধা শ্রেণির (এসি চেয়ার) ভাড়া ১৫০ টাকা; এসি সিটের ভাড়া ১৭৯ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ২৭১ টাকা।
হারবাং রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া আদায়যোগ্য পথের দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। এই পথে দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির ট্রেনের ভাড়া ৩০ টাকা; মেইল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ৪০ টাকা; কমিউটার ট্রেনের ভাড়া ৪৫ টাকা; সুলভ শ্রেণির ভাড়া ৫৫ টাকা; শোভন শ্রেণির ভাড়া ৯০ টাকা; আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ১১০ টাকা; প্রথম শ্রেণির চেয়ারের ভাড়া ১৬৭ টাকা; প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ২৪৮ টাকা; স্নিগ্ধা শ্রেণির (এসি চেয়ার) ভাড়া ২০৭ টাকা; এসি সিটের ভাড়া ২৪৮ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৩৬৮ টাকা।
লোহাগাড়া রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া আদায়যোগ্য পথের দূরত্ব ১০৬ কিলোমিটার। এই পথে দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির ট্রেনের ভাড়া ৩৫ টাকা; মেইল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ৪৫ টাকা; কমিউটার ট্রেনের ভাড়া ৫৫ টাকা; সুলভ শ্রেণির ভাড়া ৬৫ টাকা; শোভন শ্রেণির ভাড়া ১০৫ টাকা; আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ১২৫ টাকা; প্রথম শ্রেণির চেয়ারের ভাড়া ১৯০ টাকা; প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ২৮৮ টাকা; স্নিগ্ধা শ্রেণির (এসি চেয়ার) ভাড়া ২৩৬ টাকা; এসি সিটের ভাড়া ২৮৮ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৪২৬ টাকা।
সাতকানিয়া রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া আদায়যোগ্য পথের দূরত্ব ১২২ কিলোমিটার। এই পথে দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির ট্রেনের ভাড়া ৩৫ টাকা; মেইল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ৫০ টাকা; কমিউটার ট্রেনের ভাড়া ৬০ টাকা; সুলভ শ্রেণির ভাড়া ৭০ টাকা; শোভন শ্রেণির ভাড়া ১১৫ টাকা; আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ১৪০ টাকা; প্রথম শ্রেণির চেয়ারের ভাড়া ২১৩ টাকা; প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৩২২ টাকা; স্নিগ্ধা শ্রেণির (এসি চেয়ার) ভাড়া ২৬৫ টাকা; এসি সিটের ভাড়া ৩২২ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৪৭৮ টাকা।
দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া আদায়যোগ্য পথের দূরত্ব ১৩৯ কিলোমিটার। এই পথে দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির ট্রেনের ভাড়া ৪০ টাকা; মেইল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ৫৫ টাকা; কমিউটার ট্রেনের ভাড়া ৬৫ টাকা; সুলভ শ্রেণির ভাড়া ৮০ টাকা; শোভন শ্রেণির ভাড়া ১৩০ টাকা; আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ১৫৫ টাকা; প্রথম শ্রেণির চেয়ারের ভাড়া ২৩৬ টাকা; প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৩৫৭ টাকা; স্নিগ্ধা শ্রেণির (এসি চেয়ার) ভাড়া ২৯৯ টাকা; এসি সিটের ভাড়া ৩৫৭ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৫৩৫ টাকা।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া আদায়যোগ্য পথের দূরত্ব ১৮৯ কিলোমিটার। এই পথে দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির ট্রেনের ভাড়া ৫৫ টাকা; মেইল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ৭০ টাকা; কমিউটার ট্রেনের ভাড়া ৮৫ টাকা; সুলভ শ্রেণির ভাড়া ১০৫ টাকা; শোভন শ্রেণির ভাড়া ১৭০ টাকা; আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ২০৫ টাকা; প্রথম শ্রেণির চেয়ারের ভাড়া ২৭০ টাকা; প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৪০৫ টাকা; স্নিগ্ধা শ্রেণির (এসি চেয়ার) ভাড়া ৩৮৬ টাকা; এসি সিটের ভাড়া ৪৬৬ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৬৯৬ টাকা।
এবং ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া আদায়যোগ্য পথের দূরত্ব ৫৩৫ কিলোমিটার। এই পথে দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির ট্রেনের ভাড়া ১২৫ টাকা; মেইল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ১৭০ টাকা; কমিউটার ট্রেনের ভাড়া ২১০ টাকা; সুলভ শ্রেণির ভাড়া ২৫০ টাকা; শোভন শ্রেণির ভাড়া ৪২০ টাকা; আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫০০ টাকা; প্রথম শ্রেণির চেয়ারের ভাড়া ৬৭০ টাকা; প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া এক হাজার টাকা; স্নিগ্ধা শ্রেণির (এসি চেয়ার) ভাড়া ৯৬১ টাকা; এসি সিটের ভাড়া এক হাজার ১৫০ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া এক হাজার ৭২৫ টাকা।
এই ভাড়ার মধ্যেই ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত আছে। আগামী এক ডিসেম্বর থেকে এই পথে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচলের কথা আছে। কক্সবাজার-দোহাজারী নতুন রেলপথ গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন।
গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধন করবেন। এরপর তিনি কক্সবাজার থেকে রামু স্টেশন পর্যন্ত তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে ট্রেনভ্রমণ করেন।
এ রেলপথ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সঙ্গে রেলপথে যুক্ত হয়েছে কক্সবাজার, তথা যুক্ত হলো ঢাকাসহ সারাদেশের সঙ্গে। রেলপথটি বাংলাদেশকে মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডোরে যুক্ত করবে। ২০৪৫ সালের মধ্যে দেশের ৬০টি জেলায় রেল নেটওয়ার্ক স্থাপনের লক্ষ্য আছে বাংলাদেশে রেলওয়ের।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মানের জন্য ২০১০ সালে ৬ জুলাই দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। মেগা প্রকল্প হিসেবে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে টেন্ডার হলে দোহাজারী-চকরিয়া এবং চকরিয়া-কক্সবাজার (লট-১ ও লট-২) এই দুই লটে চীনা প্রতিষ্ঠান সিআরসি (চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন) ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান তমা কনসট্রাকশন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ পায়। কার্যাদেশ দেওয়ার পর ২০১৮ সালে এই মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। অনুমোদনের ১৩ বছর পর প্রকল্পটির উদ্বোধন হলো।
মাত্র ১৮৮ টাকায় যাওয়া যাবে ঢাকা থেকে কক্সবাজার
সমুদ্রের শহরে রেলস্টেশনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ভবিষ্যতে রেলওয়ে ট্র্যাক হবে ইলেকট্রিক : মন্ত্রী
এই ১০২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার।
পাঠকের মতামত